ইজরায়েল ১৩ জুন ইরানে বোমা বর্ষণ শুরু করে। তার ঠিক তিন দিন পরেই নতুন পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ইরানের ষষ্ঠ দফা আলোচনা পূর্ব-নির্ধারিত ছিল।সবটাই হচ্ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইচ্ছা অনুসারে যিনি বাহ্যত অন্তত ইরানকে ভবিষ্যতে পরমাণু অস্ত্র বানানোর কোনও সুযোগ না দিয়েও একটি চুক্তি করতে চেয়েছিলেন, ইরান যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ শান্তিপূর্ণ কাজে প্রয়োজন মতো পরমাণু শক্তি ব্যবহার করতে পারে।
সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগকে সামনে এনে নেতানিয়াহু অকস্মাৎ ইরানে বোমা-বর্ষণ শুরু করে দিলেন এই সম্ভাব্য চুক্তি ভেস্তে দেওয়ার অশুভ মতলব নিয়ে। সফলও হলেন। আমেরিকার আত্মম্ভরী রাষ্ট্রপতি এতৎসত্ত্বেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করলেননা। তদুপরি অনেক বাগাড়ম্বর সত্ত্বেও ইজরায়েল যখন কিছুতেই ইরানের পরমাণু প্রকল্পগুলি ধ্বংস করতে হিমসিম খাচ্ছে, ট্রাম্প তাদের হয়ে সেই কর্তব্যটিও করে দিলেন। বি টু বিশেষ যুদ্ধ বিমানে তিরিশ হাজার পাউন্ড ওজনের এক ডজন দানবীয় বোমা ফেলে এলেন ইরানের তিন ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্রের ওপর।
কূটনীতির ইতিহাসে এমন মানিক-জোড় সম্পর্ক দুনিয়ায় কার্যত নজিরবিহীন। সঙ্গত কারণেই তাই প্রশ্ন ওঠে এমন পীরিতির রহস্যটা কী? ইজরায়েল বারেবারে কলসির কানা দিয়ে আমেরিকার মতো সর্বশক্তিমান দেশকে আঘাত করতে পারে কোন দুর্জয় সাহসে? আমেরিকাই বা কেন অপমান হজম করে ইজরায়েলকে প্রেম বিতরণ করতে কখনও কার্পণ্য করেনা? একগুলি দশক ধরে কোন আঠা জুড়ে রেখেছে এমন অবিশ্বাস্য সম্পর্ককে?
ধরুন ইজরায়েল হামাসকে সবক শেখানোর নামে গাজায় টানা দু’বছর ধরে যা করে চলেছে সভ্যতার কোনও মানদন্ডে তা সমর্থন করা যায়না। অথচ নরসংহারের সেই পৈশাচিক উল্লাসে আমেরিকা ঠিক দাঁড়িয়ে আছে ঘাতকের পাশে, ঢালাও অস্ত্র আর অর্থসাহায্য যেমন চলছিল তেমনি চলছে। এই একটি প্রশ্নে বাইডেন আর ট্রাম্পের মধ্যে মৌলিক মতপার্থক্য নেই। এমন সুদৃঢ় বন্ধনের সুচনা হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। আজ পর্যন্ত তাই রয়ে গিয়েছে।
গোড়ার কথা
স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে ইজরায়েল ভূমিষ্ঠ। হওয়ার অনেক আগে থেকেই আমেরিকা প্যালেস্টাইনে একটি “ইহুদি স্বদেশভূমি”-র ভাবনাকে সমর্থন করেছিল। বালফোর ঘোষণা (১৯১৭)-এর দুই বছর পর, ১৯১৯ সালের ৩ মার্চ, প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন বলেছিলেন, “মিত্র শক্তিগুলো, আমাদের সরকার ও জনগণের পূর্ণ সম্মতিতে, প্যালেস্টাইনে একটি ইহুদি কমনওয়েলথের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।” ১৯২২ ও ১৯৪৪ সালে মার্কিন কংগ্রেস বালফোর ঘোষণাকে সমর্থন করে প্রস্তাব পাশ করে। আমেরিকাই প্রথম দেশ প্রথম দেশ যারা ইজরায়েলকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়য১৯৪৮ সালে নতুন রাষ্ট্র-ঘোষণার ১১ মিনিটের মধ্যেই।
অথচ তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের প্রথম দুই দশক খুব মসৃণ ছিল না। ১৯৫৬ সালে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সঙ্গে মিলে ইজরায়েল যখন সুয়েজ যুদ্ধ শুরু করে, আইজেনহাওয়ার প্রশাসন অসন্তুষ্ট হয়েছিল।।ওয়াশিংটন হুমকি দিয়েছিল ইসজরায়েল যদি দখলকৃত এলাকা থেকে সরে না আসে, তাহলে তারা সাহায্য বন্ধ করে দেবে। সোভিয়েত ইউনিয়নও হুমকি দেয়, জবরদখল হওয়া জমি অবিলম্বে ছেড়ে না দেওয়া লে তারা ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়বে। শেষ পর্যন্ত ইজরায়েল পিছু হটে। একইভাবে, ১৯৬০-এর দশকে কেনেডি প্রশাসন ইজরায়েলের গোপন পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রকাশ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
আমেরিকার মনোভাবে নাটকীয় পরিবর্তন হয় ১৯৬৭ সালে যখন ইজরায়েল মাত্র ছয় দিনে জর্ডান, সিরিয়া ও মিশরের মিত্রশক্তিকে পরাজিত করে এবং ব্যাপক এলাকা দখল করে নেয়। একই সময় আমেরিকা ভিয়েতনামে বিপাকে পড়েছিল। আমেরিকার উল্লেখযোগ্য সাহায্য ছাড়াই দ্রুত যুদ্ধ শেষ করে দেয় ইজরায়েল।। মিশর ও সিরিয়া ছিল সোভিয়েত মিত্র—ফলে ইজরায়েলকে সোভিয়েত সম্প্রসারণ রোধে বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে দেখতে শুরু করে আমেরিকা।
আজ আমেরিকার একটি ব্যতিক্রমী মিত্র দেশ ইজরায়েল।। আমেরিকার কাছ থেকে ইজরায়েল সব ধরনের অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থন পায় প্রায় নিঃশর্তে। সবাই জানে ইজরায়েল একটি অঘোষিত পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র, কিন্তু কখনও কোনো বৈশ্বিক তদন্ত বা চাপের মুখে পড়েনি—সেখানেও আমেরিকা তার রক্ষাকবচ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইজরায়েল আমেরিকার কাছ থেকে যে পরিমাণ অর্থ সাহায্য পেয়েছে, অন্য কেউ তা পায়নি। ১৫৮ বিলিয়ন ডলার। এখনও প্রতিবছর সামরিক খাতে ইজরায়েল ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়—যা সেই দেশের সামরিক বাজেটের প্রায় ১৬ শতাংশ।
আমেরিকা আবার ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদারও বটে—উভয়ের বার্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি দুই দেশ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে গবেষণা এবং অস্ত্র উৎপাদনও করে একসঙ্গে।। ইজরায়েলের মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন-ডোম’-এর যন্ত্রাংশ আমেরিকায় তৈরি হয় আংশিক অর্থসাহায্যও করে! আমেরিকার বদান্যতায় ইজরায়েল আজ অস্ত্র উৎপাদনে নাম-ডাক কুড়িয়েছে। অস্ত্র-বানিজ্যে ইজরায়েলের স্থান এখন দশমে।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ইজরায়েলকে পক্ষীমাতার মতো রক্ষা করে, সেও আমেরিকা। ১৯৭২ থেকে আজ পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদে ইজরায়েল বিরোধী প্রস্তাব আটকে দিতে আমেরিকা ৫০ বারেরও বেশি ভেটো প্রয়োগ করেছে। ১৯৭৩ সালে মিশর ও সিরিয়ার আকস্মিক হামলায় ইজরায়েল রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিল, সেই সঙ্কটে বিদ্যুৎ গতিতে আমেরিকা ত্রাতার ভূমিকায় না নামলে গোলান হাইটস ও সিনাই থেকে শত্রুপক্ষকে হটানো সহজ হোতনা। ১৯৮২ সালে ইজরায়েল লেবাননে হামলা চালালে, ওয়াশিংটন তৎক্ষণাৎ সেখানে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠায়। প্রথম ইনতিফাদার পর অসলো শান্তি প্রক্রিয়াকে সমর্থন ও দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রস্তাব মেনে নিলেও আমেরিকা কখনও একান্ত মিত্রকে দূরে সরিয়ে রাখেনি।
ওয়াশিংটন সহ পশ্চিমি দুনিয়ার সর্বত্র একটি লব্জ ব্যবহৃত হয় দীর্ঘদিন যাবৎ। ইজরায়েলের সব যুদ্ধই নাকি আত্মরক্ষার তাগিদে এবং সেই অধিকারকে তারা ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করে। আগের ট্রাম্প প্রশাসন জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। ট্রাম্প সরকার গোলান হাইটসে ইজরায়েলের দখলদারিও অনুমোদন করে। ৭ অক্টোবরের পর,গণহত্যার অভিযোগে কর্ণপাত না করে আমেরিকা অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। গত বছর ইজরায়েল যখন ইরানে হামলা চালায় এবং ইরান পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, তখনও আমেরিকা দ্রুত ইজরায়েলের পক্ষে দাঁড়ায়। আর এবার তো তারা নিজেরাই ইজরায়েলের মান রাখতে ইরানে গিয়ে বোমা ফেলে এসেছে।
বিশেষ সম্পর্ক
সময়ে সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ঠোকাঠুকি হয়, মতবিরোধ বেরিয়ে আসে প্রকাশ্যে। সম্পর্কের দ্বন্দ্ব থাকলেও, জন এফ কেনেডি যে “বিশেষ সম্পর্ক”-এর কথা বলেছিলেন, তাতে ব্যত্যয় হয়নি কখনও। ১৯৭০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার তেল আভিভের উপর চাপ সৃষ্টি করেন যাতে তারা মিশরের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে এবং ফিলিস্তিনিদের কিছু ছাড় দেয়। পরবর্তীতে ইজরায়েল ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির মাধ্যমে শান্তি ফ্রেমওয়ার্কে সই করে, যা ভবিষ্যতে অসলো চুক্তির পথ প্রশস্ত করেছিল। দ্বিতীয় ইনতিফাদার সময়ে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইজরায়েলকে সংযম দেখানোর কড়া নির্দেশ দেন।। ২০০২ সালে তিনি ইজরায়েলকে অবিলম্বে পশ্চিম তীর থেকে সেনা সরাতে বলেন—কিন্তু সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত করা হয়।। তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রেন্ট স্কোক্রফট মন্তব্য করেছিলেন, “শ্যারন বুশকে নিজের আঙুলে পেঁচিয়ে রেখেছিল।”
প্রেসিডেন্ট ওবামা ও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যে ২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে প্রকাশ্যে মতবিরোধ হয়েছিল। নেতানিয়াহু রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে গিয়ে ওবামার ইরান নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। তবু ওবামা রাষ্ট্রপুঞ্জে ইজরায়েলকে রক্ষা করে গিয়েছেন তাঁর আট বছরের কার্যকালের পুরোটা সময় জুড়ে।হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়ার আগে সেই ওবামাই আবার পরম মিত্রকে ৩৮ বিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্যাকেজ তৈরি করে যান। এবং নিজের বিদায়ী সময়ে ৩৮ বিলিয়ন ডলারের একটি সামরিক সহায়তা প্যাকেজ পাশ করেন ইজরায়েলের জন্য। বাইডেন প্রশাসন এক সময় নেতানিয়াহুর বিচারব্যবস্থার সংস্কার উদ্যোগের সমালোচনা করলেও, ৭ অক্টোবরের পরে গাজায় যুদ্ধে পুরোপুরি সহযোগিতা করে গিয়েছে। এখন ট্রাম্পও চলেছেন সেই পথ ধরেই।
লবির শক্তি
অতএব প্রশ্ন আমেরিকা কেন সবসময় অন্ধের মতো কেবল ইজরায়েলেরই পক্ষ নেয়? একটি ব্যাখ্যা হতে পারে—মধ্যপ্রাচ্যের মতো একটি অস্থির কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ইজরায়েল সামরিক প্রয়োজনের নিরিখে ওয়াশিংটনের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ঠান্ডা যুদ্ধের সময়, এই বন্ধুকে সোভিয়েত সম্প্রসারণের প্রতিরোধ হিসেবে দেখত আমেরিকা। ঠান্ডা যুদ্ধের পরে, আমেরিকা যখন পশ্চিম এশিয়ায় সক্রিয়ভাবে জড়াতে শুরু করে, তখন ইজরায়েল, সৌদি আরব ও মিশরকে তারা চিহ্নিত করে স্থিতিশীলতার স্তম্ভ হিসেবে।
এর সঙ্গে যোগ করুন আমেরিকার অভ্যন্তরীন বাধ্যবাধ্যতা। দেশের জনমত, জনমত, নির্বাচনী রাজনীতি, ও একটি শক্তিশালী ইজরায়েলপন্থী লবি যাদের আর্থিক প্রতিপত্তিকে কোনও দলই অগ্রাহ্য করতে পারেনা। ইজরায়েল ভূমিষ্ঠ হওয়া ইস্তক মার্কিন কংগ্রেসের একটি বড় অংশ দেশটির সোচ্চার সমর্থক থাকবে। অধিকাংশ আমেরিকান নাগরিক ইজরায়েল সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। আমেরিকান ইহুদি ও ইভানজেলিক খ্রিস্টানরা দুটি প্রভাবশালী, সক্রিয় রাজনৈতিক গোষ্ঠী—যারা উভয় দলেরই গুরুত্বপূর্ণ ভোটব্যাঙ্ক এবং ইজরায়েলপন্থী।
বাকি রইল ইজরায়েলি নবি। তাছাড়া, সেই লবি কতটা প্রভাবশালী ২০০৬ সালে প্রকাশিত একটি তথ্যবহুল প্রবন্ধে তার বিশদ উল্লেখ আছে। যুগ্মভাবে জন মিয়ারশেইমার ও স্টিফেন ওয়াল্ট ।নাম “দ্য ইজরায়েল লবি”। প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে, এই লবিই তৈরি করে দেয় মার্কিন নীতির খুঁটিনাটি। ইজরায়েলপন্থী জনমতকে এরা মদত দেয়, বিরোধীদের দমন করার চেষ্টা করে আর ইজরায়েলপন্থী রাজনীতিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে দরাজ হাতে। যেমন আমেরিকান-ইজরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি (AIPAC)—একটি প্রভাবশালী ইজরায়েলপন্থী লবি। প্রতি বছর এরা নানা সভা-সমিতির আয়োজন করে যেখানে অতিথি হয়ে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেসম্যান, সেনেটর ও ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীরা। এই লবি রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট দুই দলেই জলের মতো টাকা ছড়ায়, ইজরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থনের প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে।
এই সবকিছুর সমন্বয়ে—ইজরায়েলের অবস্থানগত গুরুত্ব, আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, লবির উপস্থিতি এবং সামরিক শিল্পের সম্পর্ক—একটি প্রাতিষ্ঠানিক ঐকমত্য গড়ে তুলেছে ওয়াশিংটনে। তাই দুনিয়া উল্টে গেলেও ইজরায়েল- প্রীতিতে দোলা লাগেনা এতটুকু।